তুরস্কের ৮১ প্রশাসনিক প্রদেশের প্রতিনিধিত্বকারী ৮৭ নির্বাচনী জেলা থেকে জেফারসন পদ্ধতিতে একটি দলীয়-তালিকা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ৬০০ জন সংসদ সদস্য (ভারপ্রাপ্ত) পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন (ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারা তিনটি নির্বাচনী জেলায় বিভক্ত যেখানে ইজমির ও বুরসা বিশাল জনসংখ্যার কারণে দুটি করে ভাগ করা হয়েছে)। একটি ভারসাম্যহীন সংসদ ও এর অত্যধিক রাজনৈতিক বিভাজন এড়াতে ১৯৮২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটি দলকে সংসদে প্রতিনিধিত্বের যোগ্যতা অর্জনের জন্য জাতীয় ভোটের কমপক্ষে ১০% জিততে হয়েছে,[১] কিন্তু ২০২২ সালে এটি ৭% এ নেমে আসে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১০% সীমার ফলস্বরূপ, ২০০২ সালের নির্বাচনের পরে মাত্র দুটি দল এবং ২০০৭ সালে তিনটি দল আইনসভায় আসন জিতেছিলো। ২০০২ সালের নির্বাচনে পূর্ববর্তী সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা প্রতিটি দলকে চেম্বার থেকে বের করে দেওয়া এবং ৪৬.৩% ভোটারের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিলো।[১] এই ভোটের সীমার সমালোচনা করা হয়েছে, কিন্তু ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের কাছে করা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়।[২]
স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচন করতে পারেন[৩] এবং কোনো প্রান্তিকের প্রয়োজন ছাড়াই নির্বাচিত হতে পারেন।[৪]
২০১৫ সালের জুনের সাধারণ নির্বাচনের পর ২৩ জুন ২০১৫ তারিখে সংসদে একটি নতুন মেয়াদ শুরু হয়। সিএইচপি থেকে দেনিজ বায়কাল অস্থায়ীভাবে স্পিকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, কারণ এটি একটি ভারসাম্যহীন সংসদের সময় টিবিএমএমের সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যের স্পিকার হিসাবে কাজ করার প্রথা আছে। ইসমাইল কাহরামান ২২ নভেম্বর ২০১৫-এ মীমাংসা নির্বাচনের পর নির্বাচিত হন।[৫]
সংসদের কার্যবিবরণী আরবি, রুশ, ইংরেজি ও ফরাসি চারটি ভাষায় অনুবাদ করা হলেও তুরস্কের দ্বিতীয় সর্বাধিক স্থানীয় কুর্দি ভাষায় করা হয়না।[৬] যদিও কুর্দি ভাষায় বাক্যাংশ অনুমোদিত হতে পারে, তবে সম্পূর্ণ বক্তৃতা নিষিদ্ধ।[৭]
যে দলগুলোর কমপক্ষে ২০ জন ভারপ্রাপ্ত রয়েছে তারা একটি সংসদীয় দল গঠন করতে পারে। বর্তমানে সংসদে পাঁচটি সংসদীয় দল রয়েছে: সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন প্রাপ্ত একেপি, সিএইচপি, এমএইচপি, ইয়ি দল ও এইচডিপি।[৮]
এই কমিটিগুলো সংসদের নিরীক্ষার অন্যতম হাতিয়ার। সরকার, রাজনৈতিক দল গোষ্ঠী বা কমপক্ষে ২০ সংসদ সদস্যদের দাবির ভিত্তিতে গবেষণা শুরু হতে পারে। দায়িত্বটি একটি কমিটিকে অর্পণ করা হয় যার সদস্য সংখ্যা, কাজের সময়কাল ও কাজের অবস্থান সংসদীয় স্পিকারের প্রস্তাব এবং সাধারণ পরিষদের অনুমোদন দ্বারা নির্ধারিত হয়।[১৮][১৯]
রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি হলে এবং গোপন ভোটিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হলে এই কমিটিগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৯]
অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার সংসদীয় পরিষদ (৫ সদস্য)[৩১]
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপীয় সহযোগিতা প্রক্রিয়ার সংসদীয় পরিষদ (৬ সদস্য)[৩২]
সংসদ সদস্যগণ আবেদন কমিটি বা পরিকল্পনা ও বাজেট কমিটির সদস্য না হলে একাধিক কমিটিতে যোগ দিতে পারবেন। ওই কমিটির সদস্যরা অন্য কোনো কমিটিতে অংশ নিতে পারবেন না। অন্যদিকে সংসদ সদস্যদেরও কমিটির জন্য কাজ করতে হয় না। প্রতিটি কমিটির সদস্য সংখ্যা উপদেষ্টা পরিষদের প্রস্তাব ও সাধারণ পরিষদের অনুমোদন দ্বারা নির্ধারিত হয়।[১৯]
কমিটি যে ইস্যু পায় সে অনুযায়ী উপ কমিটি স্থাপিত হয়। শুধুমাত্র সরকারি অর্থনৈতিক উদ্যোগ (পিইই) কমিটিরই ধ্রুবক উপ কমিটি আছে যেগুলো পিইইর একটি দলের জন্য বিশেষভাবে দায়ী।[১৯]
কমিটির বৈঠক সাংসদ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও সরকারি প্রতিনিধিদের জন্য উন্মুক্ত। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা কমিটিতে কথা বলতে পারলেও সংশোধনী প্রস্তাব বা ভোট দিতে পারবেন না। প্রত্যেক সংসদ সদস্য কমিটির প্রতিবেদন পড়তে পারেন।[১৯]
এনজিওগুলো কমিটির আমন্ত্রণে কমিটির সভায় যোগ দিতে পারে তাই স্বেচ্ছাসেবক ব্যক্তি বা জনসাধারণের অংশগ্রহণ উপলব্ধ নয়। ভিজ্যুয়াল মিডিয়া নয় এমন গণমাধ্যম বৈঠকে অংশ নিতে পারে। গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা সাধারণত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সংসদীয় কর্মী। কমিটিগুলো যৌথ সিদ্ধান্তে গণমাধ্যমের উপস্থিতি রোধ করতে পারে।[৩৩]
বর্তমান সংসদ ভবনটি দেশের সংসদের তৃতীয় ভবন। যে ভবনে প্রথম সংসদ ছিলো সেটিকে ঐক্য ও প্রগতি সমিতির আঙ্কারা সদর দপ্তর থেকে থেকে রূপান্তরিত করা হয়েছিলো। স্থপতি হাসিপ বে দ্বারা এর নকশা করা হয়,[৩৪] এটি ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছিলো এবং এখন এটি স্বাধীনতা যুদ্ধ জাদুঘরের ভবন হিসাবে ব্যবহৃত হয়, দ্বিতীয় ভবনটি যেখানে সংসদ বসানো হয়েছিলো সেটি স্থপতি ভেদাত (টেক) বে (১৮৭৩-১৯৪২) দ্বারা নকশা করা হয়েছিলো যা ১৯২৪ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়।[৩৪] এটি এখন প্রজাতন্ত্র জাদুঘর হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে। মহান জাতীয় সভা বর্তমানে আঙ্কারার বাকানলুকলার পাড়ায় একটি আধুনিক ও মনোমুগ্ধকর ভবনে অবস্থিত।[৩৫] স্থাপত্যবিদ ও অধ্যাপক ক্লেমেন্স হোলজমিস্টার (১৮৮৬-১৯৯৩) দ্বারা স্মৃতিসৌধ ভবনের প্রকল্পটির নকশা করা হয়েছিলো।[৩৪] ভবনটিকে ১৯৮৯-১৯৯৯ সালের তুর্কি ৫০,০০০ লিরা ব্যাঙ্কনোটের বিপরীতে চিত্রিত করা হয়।[৩৬]২০১৬ সালের তুরস্কের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সময় ভবনটি তিনবার বিমান হামলার শিকার হয়ে লক্ষণীয় ক্ষতি হয়েছিলো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পরে, সংসদ ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে একটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যায়।[৩৭]
↑Turkish Directorate General of Press and Information (২৪ আগস্ট ২০০৪)। "Political Structure of Turkey"। Turkish Prime Minister's Office। ৫ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৬।
↑Yale, Pat; Virginia Maxwell (২০০৫)। Turkey। Lonely Planet। আইএসবিএন1-74059-683-8। ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০২০।