কটকের যুদ্ধ (১৭৪১)
কটকের প্রথম যুদ্ধ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলির বিদ্রোহ, বর্গির হাঙ্গামা এবং বাংলায় মারাঠা আক্রমণ (১৭৪১) | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
মারাঠা সাম্রাজ্য দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খানের দল[১] সৈয়দ আহমদ খানের বিদ্রোহী সৈন্যদল[১] | বাংলা | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
অজ্ঞাত মির্জা বাকের | সৈয়দ আহমদ খান | ||||||||
শক্তি | |||||||||
অজ্ঞাত | অজ্ঞাত | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
অজ্ঞাত | অজ্ঞাত |
কটকের প্রথম যুদ্ধ ১৭৪১ সালের আগস্টে মির্জা বাকেরের নেতৃত্বাধীন মারাঠা বাহিনী এবং উড়িষ্যার প্রাদেশিক শাসনকর্তা সৈয়দ আহমদ খানের সৈন্যবাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধে সৈয়দ আহমদ পরাজিত ও বন্দি হন[১] এবং মির্জা বাকের কটক দখল করে নেন[১]।
পটভূমি
[সম্পাদনা]১৭৪০ সালে আলীবর্দী খান সরফরাজ খানকে পরাজিত ও নিহত করে বাংলার মসনদ দখল করেন। এসময় বাংলার অধীনস্থ উড়িষ্যা প্রদেশের শাসনকর্তা ছিলেন সরফরাজ খানের ভগ্নিপতি দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খান। তিনি আলীবর্দীর কর্তৃত্ব মেনে নেন নি, বরং বিদ্রোহ ঘোষণা করেন[১]। কিন্তু ১৭৪১ সালের মার্চে আলীবর্দী এই বিদ্রোহ দমন করে দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলিকে বিতাড়িত করেন এবং নিজ ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা সৈয়দ আহমদ খানকে উড়িষ্যার নায়েব নাযিম নিযুক্ত করেন। দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি উড়িষ্যা পুনর্দখল করার জন্য মারাঠা নেতা প্রথম রঘুজী ভোঁসলের সহায়তা প্রার্থনা করেন। মুর্শিদ কুলির জামাতা মির্জা বাকেরের অধীনে একদল মারাঠা সৈন্য উড়িষ্যা সীমান্তে উপস্থিত হয়[১]।
এদিকে উড়িষ্যার নবনিযুক্ত নায়েব নাযিম সৈয়দ আহমদ ছিলেন উদ্ধত প্রকৃতির। ফলে তাঁর সৈন্যবাহিনীর অনেকেই তাঁর প্রতি বিরূপ হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় মির্জা বাকেরের নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনী উড়িষ্যা আক্রমণ করলে সৈয়দ আহমদের অসন্তুষ্ট সৈন্যরা মারাঠাদের সঙ্গে যোগদান করে[১]।
যুদ্ধের ঘটনাবলি
[সম্পাদনা]মির্জা বাকেরের নেতৃত্বাধীন মারাঠা সৈন্য ও সৈয়দ আহমদের বিদ্রোহী সৈন্যদের সম্মিলিত বাহিনী প্রায় বিনা বাধায় উড়িষ্যার অনেকাংশ দখল করে নেয় এবং ১৭৪১ সালের আগস্টে উড়িষ্যার তদানীন্তন রাজধানী কটকের নিকটবর্তী হয়। সৈয়দ আহমদ তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু মির্জা বাকেরের তুলনামূলক বৃহত্তর ও দক্ষ সৈন্যবাহিনীর নিকট সৈয়দ আহমদের সৈন্যদল সহজেই পরাস্ত হয়[১]। সৈয়দ আহমদ সপরিবারে বন্দি হন এবং তাঁকে বড়বাটি দুর্গে কঠোর প্রহরাধীনে অন্তরীণ করে রাখা হয়[১]। মির্জা বাকেরের নেতৃত্বে মারাঠা সৈন্যরা কটকের ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে।
ফলাফল
[সম্পাদনা]কটক অধিকারের পর কার্যত সমগ্র উড়িষ্যার ওপরই মির্জা বাকেরের মারাঠা সৈন্যদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংবাদ মুর্শিদাবাদে পৌঁছলে নবাব আলীবর্দী সসৈন্যে উড়িষ্যার দিকে অগ্রসর হন। ১৭৪১ সালের ডিসেম্বরে রায়পুরের যুদ্ধে তিনি মির্জা বাকেরের নেতৃত্বাধীন মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত ও বিতাড়িত করেন, এবং নবাবের সেনাপতি মীর জাফর বড়বাটি দুর্গ থেকে সৈয়দ আহমদকে মুক্ত করেন[১]। ফলে উড়িষ্যায় বাংলার নবাবের কর্তৃত্ব পুন:প্রতিষ্ঠিত হয়[২]।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ড. মুহম্মদ আব্দুর রহিম, (বাংলাদেশের ইতিহাস), নবাব আলীবর্দী খান, পৃ. ২৯২–২৯৩
- ↑ ক খ মোহাম্মদ শাহ (২০১২)। "মারাঠা হামলা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।